জ্ঞান ও অনুধাবন মূলক প্রশ্নসমূহঃ
১। সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–সংখ্যা গণনা বা হিসাব করার জন্য বিভিন্ন প্রতীক বা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এই সকল প্রতীক লেখার নিয়ম সমূহকেই সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়। অর্থাৎ যে পদ্ধতির মাধ্যমে সংখ্যা প্রকাশ এবং গণনা করা হয়, তাহাই সংখ্যা পদ্ধতি নামে পরিচিত।
২। পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ– যে সকল সংখ্যার প্রতিটি অংক সমূহের নিজস্ব মান, স্থানীয় মান এবং ঐ সংখ্যার ভিত্তি(Base) দেওয়া থাকে। যেমন- বাইনারি, অক্ট্যাল, দশমিক, হেক্সাডেসিমেল ইত্যাদি।
৩। নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–এই ধরনের সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত সংখ্যার অংক সমূহের কোনো স্থানীয় মান থাকে না। শুধু সংখ্যার নিজস্ব মান থাকে। যেমন- হায়ারোগ্লিফিক্স(Hieroglyphics), ম্যায়ন(Mayan) ইত্যাদি।
৪। দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি- যে সংখ্যা পদ্ধতিতে দশটি অংক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে দশমিক বা ডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। প্রতীক সমূহ- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯
৫। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি- যে সংখ্যা পদ্ধতিতে দুটি অংক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়। প্রতীক সমূহ- ০, ১
৬। অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি- যে সংখ্যা পদ্ধতিতে আটটি অংক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। প্রতীক সমূহ- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭
৭। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ–হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি- যে সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬ টি অংক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়। প্রতীক সমূহ- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, A, B, C, D, E, F
৮। সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি কী?
উত্তরঃ–কোনো সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মোট চিহ্ন বা প্রতীককে ঐ সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তি বলা হয়। যেমন- দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত প্রতীক বা চিহ্নের সংখ্যা ১০ সুতরাং এই সংখ্যার বেজ বা ভিত্তি হচ্ছে ১০।
৯। বিট, বাইট কী?
উত্তরঃ–বিটঃ- Binary Digit এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে Bit. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ডিজিট 0 এবং 1 প্রত্যেকটিকে এক একটি বিট বলা হয়।
বাইটঃ- বাইনারি ডিজিট ০ এবং ১ সর্বমোট আট বার পাশাপাশি অবস্থান করে এক বাইট সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ ১ বাইট= ৮ বিট। যেমন- 10001001=এক বাইট।
১০। প্যারিটি বিট কী?
উত্তরঃ–কম্পিউটার বা অন্য সকল ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের মধ্যে একাধিক বিট আদান-প্রদান হয়। এ সকল বিট প্যাটার্ন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রেরণের সময় বিটের নির্ভরশীলতা বাড়ানোর জন্য সহজ একটি উপায় হলো তথ্যের সাথে অতিরিক্ত একটি বিট সংযোজন করা। সংযোগকৃত এই বিটকে প্যারিটি বিট বলে।
প্যারিটি বিট দুই ধরনের। যথা-
জোড় প্যারিটি এবং বিজোড় প্যারিটি বিট।
১১। ১-এর পরিপূরক বা 1’s complement কী?
উত্তরঃ–কোন বাইনারি সংখ্যার বিটসমূহকে উল্টিয়ে অর্থাৎ 0-এর স্থলে 1 এবং 1-এর স্থলে 0 বসিয়ে সংখ্যাটির ১-এর পরিপূরক বা 1’s complement পাওয়া যায় ।
১২। ২-এর পরিপূরক বা 2’s complement কী?
উত্তরঃ–কোন বাইনারি সংখ্যার বিটসমূহকে উল্টিয়ে অর্থাৎ 0-এর স্থলে 1 এবং 1-এর স্থলে 0 বসিয়ে সংখ্যাটির ১-এর পরিপূরক বা 1’s complement পাওয়া যায়। প্রাপ্ত ১-এর পরিপূরকের সাথে ১ যোগ করলে বাইনারি সংখ্যার ২-এর পরিপূরক বা 2’s complement পাওয়া যায়। ২-এর পরিপূরকের মাধ্যমে ধনাত্মক চিহ্নযুক্ত সংখ্যাকে ঋণাত্মক চিহ্নযুক্ত সংখ্যায় রূপান্তর করা যায়।
১৩। নিগেশন বা বিপরীতকরণ কী?
উত্তরঃ–কোন ধনাত্মক সংখ্যাকে ঋণাত্মক সংখ্যায় কিংবা কোন ঋণাত্মক সংখ্যাকে ধনাত্মক সংখ্যায় পরিবর্তন করাকে বিপরীতকরণ বা নিগেশন বলে। চিহ্ন যুক্ত বাইনারি সংখ্যাকে ২-এর পরিপূরক এর মাধ্যমে নিগেশন করা হয়।
১৪। কোড (Code) কী?
উত্তরঃ–অংক, অক্ষর এবং অন্যান্য চিহ্নকে কম্পিউটারে প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত বিটের বিন্যাসকে বা সুবিন্যস্ত রূপকে কোড (Code) বলা হয়। যেমন-
অক্ট্যাল কোড
হেক্সাডেসিমেল কোড
বিসিডি কোড (BCD Code)
১৫। এনকোডিং এবং ডিকোডিং কী?
উত্তরঃ–
এনকোডিং- কম্পিউটারে ব্যবহৃত বর্ণ, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্নসমূহের বাইনারি রূপান্তর প্রক্রিয়াকে এনকোডিং বলে।
ডিকোডিং- কম্পিউটারে প্রসেসিংকৃত বাইনারি কোড সমূহকে পুনরায় বর্ণ, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্নসমূহে রূপান্তর করা হয়। এই পদ্ধতিকে ডিকোডিং বলে।
১৬। বিসিডি (BCD) কোড কী?
উত্তরঃ–BCD শব্দের পূর্ণরূপ হলো Binary Coded Decimal। দশমিক সংখ্যার প্রতিটি অংককে সমতুল্য বাইনারি সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে বিসিডি কোড বলে। ৪ টি বিট দ্বারা 24 অর্থাৎ ১৬ টি ভিন্ন অবস্থা নির্দেশ করা যায়। এই ১৬ টি অবস্থা ব্যবহার করে কয়েক ধরনের বিসিডি কোড তৈরি সম্ভব।
১৭। আলফানিউমেরিক কোড কী?
উত্তরঃ–কতকগুলো বিশেষ চিহ্ন(!, @, #, $, %, *, / ইত্যাদি), অক্ষর(a-z, A-Z), অংক(0-9) এবং বিভিন্ন গাণিতিক চিহ্ন(+, -, =, x ইত্যাদি) জন্য ব্যবহৃত কোডকে আলফানিউমেরিক কোড বলা হয়।
১৮। অ্যাসকি(ASCII) কোড কী?
উত্তরঃ–ASCII এর পূর্ণরূপ American Standard Code for Information Interchange। ১৯৬৫ সালে রবার্ট বিমার সাত বিটের ASCII কোড তৈরি করেন। এটি বহুল প্রচলিত ৭ বিট বিশিষ্ট আলফানিউমেরিক কোড। যা ইউনিকোডের পূর্বে জনপ্রিয় ছিল। ASCII কোড দুই ধরনের।একটি ASCII-7 যা সাতটি বিট নিয়ে গঠিত। অন্যটি ASCII-8 যা আটটি বিট নিয়ে গঠিত।
১৯। ইবিসিডিক(EBCDIC) কোড কী?
উত্তরঃ–EBCDIC এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Extended Binary Coded Decimal Interchange Code। এই ধরনের কোডকে ৮-বিট BCD কোডও বলা হয়ে থাকে। এই কোড দ্বারা ২৮ অর্থাৎ ২৫৬ টি অদ্বিতীয় অংক, অক্ষর এবং চিহ্নকে বাইনারিতে প্রকাশ করা হয়।
২০। ইউনিকোড(UNICODE) কোড কী?
উত্তরঃ–ইউনিকোডের পূর্ণরূপ হচ্ছে Universal Code। বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটার কোডে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য Apple computer corporation এবং Xerox corporation-এর প্রকৌশলীগণ ১৯৯১ সালে ইউনিকোড উদাভাবন করেন।ইউনিকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। এই কোডের মাধ্যমে ২১৬ অর্থাৎ ৬৫,৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়।
২১। পজিশনাল এবং নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–সংখ্যা ব্যবহার পদ্ধতির ভিত্তিতে সংখ্যা পদ্ধতিকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
নন-পজিশনাল (Non Positional) সংখ্যা পদ্ধতি
পজিশনাল (Positional) সংখ্যা পদ্ধতি
নন-পজিশনালঃ- এই ধরনের সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত সংখ্যার অংক সমূহের কোনো স্থানীয় মান থাকে না। শুধু সংখ্যার নিজস্ব মান থাকে। যেমন- হায়ারোগ্লিফিক্স(Hieroglyphics), ম্যায়ন(Mayan) ইত্যাদি।
পজিশনালঃ- এক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংখ্যার অংক সমূহের নিজস্ব মান, স্থানীয় মান এবং ঐ সংখ্যার ভিত্তি(Base) দেওয়া থাকে। যেমন- বাইনারি, অক্ট্যাল, দশমিক, হেক্সাডেসিমেল ইত্যাদি।
২২। তিন/পাঁচ/সাত/নয় ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোনো সংখ্যা পদ্ধতির বেজ বা ভিত্তির উপর নির্ভর করে ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে কতগুলো মৌলিক চিহ্ন আছে। অর্থাৎ কোনো সংখ্যা পদ্ধতির বেজ যত ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে তত গুলো মৌলিক প্রতীক বা অংক রয়েছে। তিন ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট তিনটি মৌলিক প্রতীক বা অংক রয়েছে। যথা-০, ১, ২
পাঁচ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট পাঁচটি মৌলিক প্রতীক বা অংক রয়েছে। যথা- ০, ১, ২, ৩,৪
সাত ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট সাতটি মৌলিক প্রতীক বা অংক রয়েছে। যথা- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫,৬
নয় ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট নয়টি মৌলিক প্রতীক বা অংক রয়েছে। যথা- ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮
২৩। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ কাজে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহারের কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–কম্পিউটার ডিজাইনে অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতির তুলনায় বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয়। কারণ সমূহ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি অপেক্ষা সরলতম সংখ্যা পদ্ধতি।
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে দুইটি বিট ব্যবহৃত হয়। যা সহজে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়েছে বলে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
মাত্র দুটি অবস্থান থাকায় যেকোনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র তৈরিতে বর্তনী বা সার্কিট অনেক ছোট হয়। বাইনারি বিট ব্যবহারের ফলে দ্রুততার সাথে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
দশমিক পদ্ধতির সকল হিসাব বাইনারি পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।
২৪। 5D/988 সংখ্যাটি কী ধরনের? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–5D একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা। আমরা জানি, হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬ টি মৌলিক চিহ্ন বা প্রতীক ব্যবহার করা হয়। ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, A, B, C, D, E, F। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে A, B, C, D, E, F এই প্রতীক সমূহের সমকক্ষ দশমিক মান যথাক্রমে ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫। যেহেতু 5D সংখ্যাটিতে D প্রতীক বিদ্যমান যা শুধু মাত্র হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতেই রয়েছে। সুতরাং 5D একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা। অপরদিকে 988 সংখ্যাটি দশমিক ও হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি। কারণ শুধুমাত্র দশমিক এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮ এবং ৯ অংক দুইটি বিদ্যমান।
২৫। “অক্ট্যাল তিন বিট বিশিষ্ট সংখ্যা পদ্ধতি”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ৮। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অংক সমূহ ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সকল কাজ শুধুমাত্র বাইনারি পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয় যেখানে ০ এবং ১ এই দুইটি অংক বিদ্যমান। সেজন্য অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতিকে বাইনারি সংখ্যার সংক্ষিপ্ত রূপ বলা হয়ে থাকে। অক্ট্যাল থেকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে রুপান্তরের জন্য প্রতিটি অক্ট্যাল সংখ্যাকে ডান দিক থেকে তার সমতুল্য তিন বিট বাইনারি অংকে সাজিয়ে লিখে এদের একত্র করলেই অক্ট্যাল সংখ্যার সমমান বাইনারি পাওয়া যায়। যেমন- (123)8 এর বাইনারি হবে (001010111)2
২৬। 3+5=10 কেন? ব্যাখ্যা কর।/ 7+1=10 কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–3+5=10 এবং 7+1=10 মূলত একটি অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতির যোগফল। অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে 0-7 পর্যন্ত মোট ৮টি সংখ্যা ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮ এবং ৯ এর কোন ব্যবহার নেই। এই কারণে অক্ট্যাল সংখ্যার যোগের ক্ষেত্রে যোগফলটি পরের সংখ্যা ৮ না হয়ে ১০ হয়। কারণ ১০ হলো দুটি আলাদা অংক ০ এবং ১ এর সমন্বয়ে তৈরি সংখ্যা। এই ০ এবং ১ অক্ট্যাল সংখ্যা পদ্ধতির অন্তর্গত।
২৭। “বিট এবং বাইট এক নয়”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–বিটঃ- Binary Digit এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে Bit. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ডিজিট 0 এবং 1 প্রত্যেকটিকে এক একটি বিট বলা হয়।
বাইটঃ- বাইনারি ডিজিট ০ এবং ১ সর্বমোট আট বার পাশাপাশি অবস্থান করে এক বাইট সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ ১ বাইট= ৮ বিট। যেমন- 10001001=এক বাইট।
২৮। কম্পিউটারে কেন ০ এবং ১ এর ব্যবহার সুবিধাজনক? ব্যাখ্যা কর।/ “কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের কার্যপদ্ধতির সাথে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি সামঞ্জস্যপূর্ণ”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে দুইটি অংক ০ এবং ১ ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটার ডিজাইনে অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতির তুলনায় বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বহুল ব্যবহৃত হয়। কারণ সমূহ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি অপেক্ষা সরলতম সংখ্যা পদ্ধতি।
বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে দুইটি বিট ব্যবহৃত হয়। যা সহজে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়েছে বলে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
মাত্র দুটি অবস্থান থাকায় যেকোনো ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র তৈরিতে বর্তনী বা সার্কিট অনেক ছোট হয়। বাইনারি বিট ব্যবহারের ফলে দ্রুততার সাথে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
দশমিক পদ্ধতির সকল হিসাব বাইনারি পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।
২৯। (১৪)১০ সংখ্যাটি লিখতে BCD কোড এবং বাইনারি কোডের মধ্যে কোনটিতে বেশি মেমোরি প্রয়োজন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– BCD শব্দের পূর্ণরূপ হলো Binary Coded Decimal। দশমিক সংখ্যার প্রতিটি অংককে সমতুল্য বাইনারি সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে বিসিডি কোড বলে। ৪ টি বিট দ্বারা 24 অর্থাৎ ১৬ টি ভিন্ন অবস্থা নির্দেশ করা যায়। (১৪)১০ এর BCD কোড হবে ০০০১০১০০ অর্থাৎ (১৪)১০=০০০১০১০০ যাতে মোট ৮ টি বিট প্রয়োজন হয়। অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে (১৪)১০ এর মান হয় ১১১০ অর্থাৎ (১৪)১০=১১০০। বাইনারি পদ্ধতিতে (১৪)১০ এর বাইনারি লিখতে মাত্র ৪ টি বিট প্রয়োজন হয়। সুতরাং কোন একটি সংখ্যা BCD কোডে লিখতে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় বিটের তুলনায় বেশি বিট অর্থাৎ বেশি মেমোরি প্রয়োজন হয়।
৩০। “যোগের মাধ্যমে বিয়োগের কাজ সম্ভব”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– সকল ধরনের গাণিতিক হিসাব যোগ(+), বিয়োগ(-), গুণ(*) এবং ভাগের(/) মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। আবার যোগের মাধ্যমে গুণের এবং বিয়োগের মাধ্যমে যোগের কাজ করা সম্ভব। ঠিক তেমনি ২-এর পরিপূরক পদ্ধতি ব্যবহার করে যোগ এবং বিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা যায়। তাই আধুনিক কম্পিউটারে সকল গাণিতিক হিসাব সম্পন্ন করার জন্য শুধু মাত্র যোগের বর্তিনী ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত বর্তনী অনেক সরল, দামে সস্তা এবং দ্রুত গতি সম্পন্ন। যেকোনো বাইনারি সংখ্যার ১-এর পরিপূরক অর্থাৎ ঐ বাইনারি মানের ০ এর স্থলে ১ এবং ১ এর স্থলে ০ বসিয়ে প্রাপ্ত বাইনারি মানের সাথে ১ যোগ করে ২-এর পরিপূরক মান পাওয়া যায়।
৩১। ২-এর পরিপূরকের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ইলেক্ট্রনিক্স প্রযুক্তির যন্ত্র সমূহে ২-এর পরিপূরক পদ্ধতি ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে ২-এর পরিপূরকের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রকৃত মান পাঠ এবং ১-এর পরিপূরক গঠনে ০ এর জন্য দুটি বাইনারি শব্দ (+০ এবং -০) সম্ভব। বাস্তবে +০ এবং -০ বলতে কিছু নেই, শুধু ০ আছে। ২-এর পরিপূরক গঠনে এই ধরনের কোন সমস্যা হয় না।
প্রকৃত মান পাঠ ও ১-এর পরিপূরকে যোগ এবং বিয়োগের জন্য পৃথক বর্তনী ব্যবহৃত হয়, ২-এর পরিপূরকে একই বর্তনীর মাধ্যমে যোগ এবং বিয়োগের কাজ করা হয়।
১-এর পরিপূরকের ক্ষেত্রে দুইটি সমান সংখ্যার বিয়োগফল আসে -০, অপরদিকে ২-এর পরিপূরকে আসে ০ ।
৩২। “ইউনিকোড পদ্ধতি পৃথিবীর সকল ভাষার মানুষের জন্য আশীর্বাদ”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ইউনিকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। এই কোডের মাধ্যমে ২১৬ অর্থাৎ ৬৫,৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়। এর ফলে যেসব ভাষাকে কোডের অন্তর্ভুক্ত করতে ৮ বিট পর্যাপ্ত ছিল না ( যেমন- বাংলা, চাইনিজ, জাপানিজ ইত্যাদি), সেসকল ভাষার সকল চিহ্নকে কোডভুক্ত করা অনেক সহজ হয়ে যায়। বর্তমানে এই কোডের ব্যবহার পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইউনিকোড ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। যার দ্বারা ২১৬ বা ৬৫৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়।
যেকোনো ক্যারেক্টারকে কোড করার জন্য ১৬ বিট ব্যবহার করা হয়।
এই কোডের সাহায্যে বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করা সম্ভব।
ইউনিকোড থেকে অন্যান্য যেকোনো স্টান্ডার্ড কোডে পরিবর্তন করা যায়।
ইউনিকোড অ্যাসকি কোডের সাথে কম্প্যাটিবল অর্থাৎ ইউনিকোডের প্রথম ২৫৬ টি কোড, অ্যাসকি কোডের অনুরূপ।
৩৩। ইউনিকোডের পূর্বে বহুল ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক কোড কোনটি?-ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ইউনিকোডের পূর্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক কোডটি হলো ASCII কোড। ASCII এর পূর্ণরূপ American Standard Code for Information Interchange। বর্তমানে ASCII কোড বলতে ASCII-8 কে বুঝায়। ASCII-8 যা আটটি বিট নিয়ে গঠিত। যার বাম দিকের তিনটি বিটকে জোন বিট (Zone bit) এবং ডান দিকের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিট বলা হয়। এক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত বিট ব্যবহৃত হয় যাকে প্যারিটি বিট বলা হয়। ASCII-8 এ 28 সংখ্যক মোট ২৫৬ টি মৌলিক চিহ্ন বা প্রতীক অদ্বিতীয়ভাবে নির্দিষ্ট করা যায়। বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার বিশেষ করে মাইক্রোকম্পিউটারে ASCII কোডের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। যেমন- কী বোর্ড, মাউস, মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদিতে আলফানিউমেরিক ডেটা আদান-প্রদানের জন্য ASCII কোড ব্যবহৃত হয়।
৩৪। “(১৪৯)১০ সংখ্যাকে কম্পিউটার সরাসরি গ্রহণ করে না।” -ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– আমার দৈনন্দিন কাজে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি যা কম্পিউটার বুঝতে পারে না। কম্পিউটার বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে সকল কার্য সম্পাদন করে। অর্থাৎ কম্পিউটারে কোন সংখ্যা লিখলে কম্পিউটার তা বাইনারিতে রূপান্তর করে। যেকোনো সংখ্যাকে কম্পিউটারের ভাষায় রূপান্তর করার ক্ষেত্রে এক ধরনের বিশেষ বর্তনী বা সার্কিট ব্যবহার করা হয় যা এনকোডার নামে পরিচিত। এই সকল কারণে কম্পিউটার (১৪৯)১০ সংখ্যাকে সরাসরি গ্রহণ করে না।
৩৫। চিহ্নযুক্ত সংখ্যা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা লেখার জন্য সংখ্যার পূর্বে ধনাত্মক (+) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। আবার একই ভাবে ঋণাত্মক সংখ্যা লেখার জন্য সংখ্যার পূর্বে ঋণাত্মক (-) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এই ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্ন যুক্ত সংখ্যাকে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বা সাইন্ড নাম্বার বলে। বাইনারি পদ্ধতিতে এই সাইন বা চিহ্ন বোঝানোর জন্য একটি অতিরিক্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয় যা চিহ্ন বিট নামে পরিচিত। এই চিহ্ন বিট এর মান শূন্য (0) হলে সংখ্যাটি ধনাত্মক এবং এক (1) হলে সংখ্যাটিকে ঋণাত্মক ধরা হয়।
৩৬। ” ১-এর পরবর্তী সংখ্যা ১০ হতে পারে” -ব্যাখ্যা কর।
৩৬। ” ১-এর পরবর্তী সংখ্যা ১০ হতে পারে” -ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ১-এর পরবর্তী সংখ্যা হয় ২। প্রাপ্ত ২ সংখ্যাটিকে বাইনারিতে প্রকাশ করলে মান হবে ১০। যেহেতু ১ এর পরবর্তী প্রাপ্ত ২ সংখ্যাটির বাইনারি মান হয় ১০। সুতরাং ১-এর পরবর্তী সংখ্যাটি ১০ বলা যায়।
৩৭। সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোনো একটি সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন সমূহের সমষ্টিকে ঐ সংখ্যা পদ্ধতির বেজ (Base) বা ভিত্তি বলে।যেমন- দশমিক সংখ্যাতে মোট মৌলিক চিহ্ন (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯) ১০টি। সুতরাং দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ১০। তেমনিভাবে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ০ এবং ১ এই দুইটি প্রতিক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাই এর বেজ হচ্ছে ২ । অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত মোট ৮ টি প্রতিক বা চিহ্ন নিয়ে যাবতীয় গাণিতিক কর্মকান্ড সম্পাদন করা হয় বলে এর বেজ বা ভিত্তি হলো ৮। হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬ টি প্রতীক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় বলে এর বেজ হচ্ছে ১৬।
৩৮। ‘১–এর পরের সংখ্যাটি ১০ হতে পারে ’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোন সংখ্যা পদ্ধতিতে একটি সংখ্যার পরের সংখ্যা বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যাটির সাথে ১ যোগ করতে হবে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ১ এর সাথে ১ যোগ করলে ১০ হয়।
৩৯। (১১)১০সংখ্যাটিকে পজিশনাল সংখ্যা বলা হয় কেন?
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে কোন সংখ্যার মান ব্যবহৃত অংকসমূহের পজিশন বা অবস্থানের উপর নির্ভর করে তাকে পজিশন্যাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অংকসমূহের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই ধরনের সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার মান নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে সংখ্যার মান বের করার জন্য প্রয়োজন সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর নিজস্ব মান, সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি এবং অঙ্কগুলোর অবস্থান বা স্থানীয় মান। এখানে (১১)১০ সংখ্যাটি দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির। এর ভিত্তি হচ্ছে ১০। এ পদ্ধতিতে ০ থকে ৯ পর্যন্ত মোট ১০ টি মৌলিক চিহ্ন এর মধ্যে রয়েছে। এজন্য (১১)১০ সংখ্যাটিকে পজিশনাল সংখ্যা বলা হয়।
৪০। 3D কোন সংখ্যা পদ্ধতির? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোন একটি সংখ্যা কোন সংখ্যা পদ্ধতির তা নির্ভর করে সংখ্যায় ব্যবহৃত অংকগুলো কোন সংখ্যা পদ্ধতির তার উপর এবং সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তির উপর। প্রশ্নে উল্লিখিত সংখ্যার 3 অংকটি অক্টাল, ডেসিম্যাল এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে থাকলেও D প্রতীকটি একমাত্র হেক্সাডেসিমেল (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F) সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ প্রতিক দুইটি একমাত্র হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়। তাই বলা যায় 3D হলো হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা।
৪১। (২৯৮)৮ সঠিক কিনা– ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– (২৯৮)৮ সংখ্যাটি সঠিক নয়। কারণ অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্নগুলো হলো ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭। অর্থাৎ অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ৮টি মৌলিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। ফলে অকটাল সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ৮। অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে যেকোন সংখ্যা লিখতে ০ থেকে ৭ এর মধ্যে কোন মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। (২৯৮)৮ সংখ্যাটির ভিত্তি ৮ কিন্তু অংক হিসেবে ৯ ও ৮ ব্যবহার করা হয়েছে, যা অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক চিহ্নে নেই। তাই সংখ্যাটি সঠিক নয়।
৪২। (২৬৭)১০ সংখ্যাকে কম্পিউটার সরাসরি গ্রহণ করেনা–ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– সকল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি বুজতে পারে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। লজিক লেভেল ০ এবং ১ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির সাথে সামঞ্জন্যপূর্ণ। তাই কম্পিউটার বা সকল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। যেহেতু (২৬৭)১০ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির নয় তাই কম্পিউটার সরাসরি গ্রহণ করে না। তবে সংখ্যাটিকে এনকোডার নামক এক ধরনের বর্তনীর সাহায্যে বাইনারিতে রুপান্তর করে ব্যবহার করে।
৪৩। “কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের কার্যপদ্ধতির সাথে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি সামঞ্জস্যপূর্ণ”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে সকল কার্য সম্পাদন করে থাকে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে দুটি মৌলিক চিহ্ন(০,১) রয়েছে। তাই বলা যায় কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের লজিক লেভেল ০ এবং ১ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির সাথে সামঞ্জন্যপূর্ণ।
৪৪। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিগন্যাল উপযোগী কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ডিজিটাল সিগন্যাল বলতে বুঝায় কতগুলো ০ ও ১ এর সমাবেশ। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে সকল কার্য সম্পাদন করে থাকে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। যেহেতু কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সকল কার্যক্রম ০ ও ১ এর সাহায্যে সম্পন্ন হয় এবং ডিজিটাল সিগন্যাল বলতে ০ ও ১ বুজায়, তাই বলা যায় কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিগন্যাল উপযোগী।
৪৫। “অক্টাল তিন বিটের কোড”– বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮টি(০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭) মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে অকটাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ০ বা ১ এই দুটি মৌলিক চিহ্ন কে বিট বলে। অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত আটটি মৌলিক চিহ্নের মধ্যে সবচেয়ে বড় ৭। এই ৭ কে বাইনারিতে বা বিটে রূপান্তর করলে পাওয়া যায় তিন বিট(১১১)। তাহলে ৭ এর চেয়ে ছোট মৌলিক চিহ্নসমূহকে তিন বিট বা তার চেয়ে কম সংখ্যক বিটের মাধ্যমেই প্রকাশ করা যাবে। অর্থাৎ তিন বিটের মাধ্যমেই অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির সকল মৌলিক চিহ্নসমূহকে প্রকাশ করা যায়। তাই অক্টাল তিন বিটের কোড।
৪৬। “হেক্সাডেসিমেল চার বিটের কোড”– বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ১৬ টি (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F) মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ০ বা ১ এই দুটি মৌলিক চিহ্ন কে বিট বলে। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ষোলটি মৌলিক চিহ্নের মধ্যে সবচেয়ে বড় F(১৫) । এই F(১৫) কে বাইনারিতে বা বিটে রূপান্তর করলে পাওয়া যায় চার বিট(১১১১)। তাহলে F(১৫) এর চেয়ে ছোট মৌলিক চিহ্নসমূহকে চার বিট বা তার চেয়ে কম সংখ্যক বিটের মাধ্যমেই প্রকাশ করা যাবে। অর্থাৎ চার বিটের মাধ্যমেই হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির সকল মৌলিক চিহ্নসমূহকে প্রকাশ করা যায়। তাই হেক্সাডেসিমেল চার বিটের কোড।
৪৭। 5+3=10 কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– এটি একটি অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ। কারণ ৫ ও ৩ যোগ করলে ৮ হয়। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮ নেই তাই যোগফল ৮ থেকে অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ৮ বিয়োগ করলে পাওয়া যায় ০। যেহেতু একবার বিয়োগ করা হয়েছে তাই ক্যারি ১। অর্থাৎ অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৫ ও ৩ যোগ করলে ১০ হয়। অন্যভাবে বলা যায় অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৭ এর পরবর্তী সংখ্যা ১০ বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির সমতুল্য মান ৮।
৪৮। চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বলতে কি বুঝ? ব্যাখ্যা দাও।
উত্তরঃ– বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। সংখ্যাটি ধনাত্মক নাকি ঋণাত্মক তা বুঝানোর জন্য সাধারণত সংখ্যার পূর্বে চিহ্ন(+ অথবা -) ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যখন কোন সংখ্যার পূর্বে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্ন থাকে তখন সেই সংখ্যাকে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বা সাইনড নম্বর বলা হয়। বাইনারি পদ্ধতিতে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বুঝানোর জন্য প্রকৃত মানের পূর্বে একটি অতিরিক্ত বিট যোগ করা হয়। এ অতিরিক্ত বিটকে চিহ্ন বিট বলে। চিহ্ন বিট 0 হলে সংখ্যাটি ধনাত্মক এবং চিহ্নবিট ১ হলে সংখ্যাটিকে ঋণাত্মক ধরা হয়।
৪৯। ২–এর পরিপূরক কেন গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–
তাই আধুনিক কম্পিউটারে ২ এর পরিপূরক গঠনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
৫০। (১৫)১০এর সমকক্ষ BCD কোড এবং বাইনারি সংখ্যার মধ্যে কোনটিতে বেশি বিট লাগে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– BCD এর পূর্ণ রূপ হলো Binary Coded Decimal। ডেসিমেল সংখ্যার প্রতিটি অঙ্ককে ( ০ থেকে ৯ পর্যন্ত) সমতুল্য চার-বিট বাইনারি দ্বারা প্রতিস্থাপন করার পর প্রাপ্ত কোডকে BCD কোড বলে। তাহলে (১৫)১০ এর সমকক্ষ BCD কোড (০০০১০১০১)BCD (১ এর সমতুল্য চার-বিট ০০০১ এবং ৫ এর সমতুল্য চার-বিট ০১০১) যা ৮-বিট। অপরদিকে (১৫)১০ এর সমকক্ষ বাইনারি মান (১১১১)২ যা ৪-বিট। সুতরাং বলা যায়- BCD কোড এবং বাইনারি সংখ্যার মধ্যে BCD কোডে বেশি বিট লাগে।
৫১। ইউনিকোডের পূর্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক্যাল কোডটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ইউনিকোডের পূর্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক্যাল কোডটি হলো ASCII, যা American Standard Code for Information Interchange এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ১৯৬৫ সালে রবার্ট বিমার ASCII-7 উদ্ভাবন করেন এবং পরে ASCII-8 তৈরি করেন। অ্যাসকি একটি বহুল প্রচলিত কোড। বর্তমানে অ্যাসকি কোড বলতে ASCII-8 কেই বুঝায়। ASCII-8 এ প্রতিটি কোড আট বিটের হয়। যার সর্ব-বামের বিটটিকে প্যারিটি বিট এবং সর্ব-ডানের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিট বলা হয়, এবং মাঝের তিনটি বিটকে জোন বিট বলা হয়। মোট আট-বিট হওয়াতে এ কোডের মাধ্যমে ২৮ বা ২৫৬টি চিহ্নকে অদ্বিতীয়ভাবে কম্পিউটারকে বুঝানো যায়।
৫২। ইউনিকোড বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য আশীর্বাদ– বুঝিয়ে লিখ।
উত্তরঃ– ইউনিকোড বা Unicode এর পূর্ণনাম হলো Universal Code বা সার্বজনীন কোড। বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো একটি মান তৈরি করেছেন যাকে ইউনিকোড বলা হয়। Apple Computer Corporation এবং Xerox Corporation এর একদল প্রকৌশলী ইউনিকোড উদ্ভাবন করেন। ইউনিকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। এ কোডের মাধ্যমে ২১৬ বা ৬৫,৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্ন কম্পিউটারকে অদ্বিতীয়ভাবে বুঝানো যায়।ফলে বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের ভাষা ব্যবহার করেই কম্পিউটারে প্রসেস বা প্রক্রিয়াকরণ করা যায়। এই জন্য বলা যায়- ইউনিকোড বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য আশীর্বাদ।
৩৭। সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোনো একটি সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন সমূহের সমষ্টিকে ঐ সংখ্যা পদ্ধতির বেজ (Base) বা ভিত্তি বলে।যেমন- দশমিক সংখ্যাতে মোট মৌলিক চিহ্ন (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯) ১০টি। সুতরাং দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ১০। তেমনিভাবে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ০ এবং ১ এই দুইটি প্রতিক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাই এর বেজ হচ্ছে ২ । অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত মোট ৮ টি প্রতিক বা চিহ্ন নিয়ে যাবতীয় গাণিতিক কর্মকান্ড সম্পাদন করা হয় বলে এর বেজ বা ভিত্তি হলো ৮। হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬ টি প্রতীক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় বলে এর বেজ হচ্ছে ১৬।
৩৮। ‘১–এর পরের সংখ্যাটি ১০ হতে পারে ’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোন সংখ্যা পদ্ধতিতে একটি সংখ্যার পরের সংখ্যা বলতে বুঝায় ঐ সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যাটির সাথে ১ যোগ করতে হবে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ১ এর সাথে ১ যোগ করলে ১০ হয়।
৩৯। (১১)১০সংখ্যাটিকে পজিশনাল সংখ্যা বলা হয় কেন?
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে কোন সংখ্যার মান ব্যবহৃত অংকসমূহের পজিশন বা অবস্থানের উপর নির্ভর করে তাকে পজিশন্যাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অংকসমূহের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে এই ধরনের সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার মান নির্ণয় করা হয়। এই পদ্ধতিতে সংখ্যার মান বের করার জন্য প্রয়োজন সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর নিজস্ব মান, সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি এবং অঙ্কগুলোর অবস্থান বা স্থানীয় মান। এখানে (১১)১০ সংখ্যাটি দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির। এর ভিত্তি হচ্ছে ১০। এ পদ্ধতিতে ০ থকে ৯ পর্যন্ত মোট ১০ টি মৌলিক চিহ্ন এর মধ্যে রয়েছে। এজন্য (১১)১০ সংখ্যাটিকে পজিশনাল সংখ্যা বলা হয়।
৪০। 3D কোন সংখ্যা পদ্ধতির? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কোন একটি সংখ্যা কোন সংখ্যা পদ্ধতির তা নির্ভর করে সংখ্যায় ব্যবহৃত অংকগুলো কোন সংখ্যা পদ্ধতির তার উপর এবং সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তির উপর। প্রশ্নে উল্লিখিত সংখ্যার 3 অংকটি অক্টাল, ডেসিম্যাল এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে থাকলেও D প্রতীকটি একমাত্র হেক্সাডেসিমেল (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F) সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ প্রতিক দুইটি একমাত্র হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়। তাই বলা যায় 3D হলো হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা।
৪১। (২৯৮)৮ সঠিক কিনা– ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– (২৯৮)৮ সংখ্যাটি সঠিক নয়। কারণ অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্নগুলো হলো ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭। অর্থাৎ অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ৮টি মৌলিক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। ফলে অকটাল সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ৮। অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে যেকোন সংখ্যা লিখতে ০ থেকে ৭ এর মধ্যে কোন মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করতে হয়। (২৯৮)৮ সংখ্যাটির ভিত্তি ৮ কিন্তু অংক হিসেবে ৯ ও ৮ ব্যবহার করা হয়েছে, যা অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক চিহ্নে নেই। তাই সংখ্যাটি সঠিক নয়।
৪২। (২৬৭)১০ সংখ্যাকে কম্পিউটার সরাসরি গ্রহণ করেনা–ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– সকল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি বুজতে পারে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। লজিক লেভেল ০ এবং ১ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির সাথে সামঞ্জন্যপূর্ণ। তাই কম্পিউটার বা সকল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। যেহেতু (২৬৭)১০ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির নয় তাই কম্পিউটার সরাসরি গ্রহণ করে না। তবে সংখ্যাটিকে এনকোডার নামক এক ধরনের বর্তনীর সাহায্যে বাইনারিতে রুপান্তর করে ব্যবহার করে।
৪৩। “কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের কার্যপদ্ধতির সাথে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি সামঞ্জস্যপূর্ণ”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে সকল কার্য সম্পাদন করে থাকে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে দুটি মৌলিক চিহ্ন(০,১) রয়েছে। তাই বলা যায় কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশের লজিক লেভেল ০ এবং ১ বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির সাথে সামঞ্জন্যপূর্ণ।
৪৪। কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিগন্যাল উপযোগী কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ডিজিটাল সিগন্যাল বলতে বুঝায় কতগুলো ০ ও ১ এর সমাবেশ। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ শুধুমাত্র দুটি অবস্থা অর্থাৎ বিদ্যুতের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে সকল কার্য সম্পাদন করে থাকে। বিদ্যুতের উপস্থিতিকে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES বলা হয় যা লজিক লেভেল ১ নির্দেশ করে এবং বিদ্যুতের অনুপস্থিতিকে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO বলা হয় যা লজিক লেভেল ০ নির্দেশ করে। যেহেতু কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সকল কার্যক্রম ০ ও ১ এর সাহায্যে সম্পন্ন হয় এবং ডিজিটাল সিগন্যাল বলতে ০ ও ১ বুজায়, তাই বলা যায় কম্পিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিগন্যাল উপযোগী।
৪৫। “অক্টাল তিন বিটের কোড”– বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮টি(০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭) মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে অকটাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ০ বা ১ এই দুটি মৌলিক চিহ্ন কে বিট বলে। অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত আটটি মৌলিক চিহ্নের মধ্যে সবচেয়ে বড় ৭। এই ৭ কে বাইনারিতে বা বিটে রূপান্তর করলে পাওয়া যায় তিন বিট(১১১)। তাহলে ৭ এর চেয়ে ছোট মৌলিক চিহ্নসমূহকে তিন বিট বা তার চেয়ে কম সংখ্যক বিটের মাধ্যমেই প্রকাশ করা যাবে। অর্থাৎ তিন বিটের মাধ্যমেই অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির সকল মৌলিক চিহ্নসমূহকে প্রকাশ করা যায়। তাই অক্টাল তিন বিটের কোড।
৪৬। “হেক্সাডেসিমেল চার বিটের কোড”– বুঝিয়ে লেখ।
উত্তরঃ– যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ১৬ টি (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F) মৌলিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অপরদিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ০ বা ১ এই দুটি মৌলিক চিহ্ন কে বিট বলে। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ষোলটি মৌলিক চিহ্নের মধ্যে সবচেয়ে বড় F(১৫) । এই F(১৫) কে বাইনারিতে বা বিটে রূপান্তর করলে পাওয়া যায় চার বিট(১১১১)। তাহলে F(১৫) এর চেয়ে ছোট মৌলিক চিহ্নসমূহকে চার বিট বা তার চেয়ে কম সংখ্যক বিটের মাধ্যমেই প্রকাশ করা যাবে। অর্থাৎ চার বিটের মাধ্যমেই হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির সকল মৌলিক চিহ্নসমূহকে প্রকাশ করা যায়। তাই হেক্সাডেসিমেল চার বিটের কোড।
৪৭। 5+3=10 কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– এটি একটি অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ। কারণ ৫ ও ৩ যোগ করলে ৮ হয়। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮ নেই তাই যোগফল ৮ থেকে অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি ৮ বিয়োগ করলে পাওয়া যায় ০। যেহেতু একবার বিয়োগ করা হয়েছে তাই ক্যারি ১। অর্থাৎ অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৫ ও ৩ যোগ করলে ১০ হয়। অন্যভাবে বলা যায় অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৭ এর পরবর্তী সংখ্যা ১০ বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির সমতুল্য মান ৮।
৪৮। চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বলতে কি বুঝ? ব্যাখ্যা দাও।
উত্তরঃ– বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। সংখ্যাটি ধনাত্মক নাকি ঋণাত্মক তা বুঝানোর জন্য সাধারণত সংখ্যার পূর্বে চিহ্ন(+ অথবা -) ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যখন কোন সংখ্যার পূর্বে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্ন থাকে তখন সেই সংখ্যাকে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বা সাইনড নম্বর বলা হয়। বাইনারি পদ্ধতিতে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বুঝানোর জন্য প্রকৃত মানের পূর্বে একটি অতিরিক্ত বিট যোগ করা হয়। এ অতিরিক্ত বিটকে চিহ্ন বিট বলে। চিহ্ন বিট 0 হলে সংখ্যাটি ধনাত্মক এবং চিহ্নবিট ১ হলে সংখ্যাটিকে ঋণাত্মক ধরা হয়।
৪৯। ২–এর পরিপূরক কেন গুরুত্বপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ–
- ২-এর পরিপূরক গঠনে “+০” ও “-০”এর মান একই যা বাস্তবকে সমর্থন করে। কিন্তু প্রকৃত মান গঠন এবং ১-এর পরিপূরক গঠনে “+০” ও “-০”এর মান ভিন্ন হয় যা বাস্তবকে সমর্থন করে না।
- ২-এর পরিপূরক গঠনে সরল বর্তনী প্রয়োজন। সরল বর্তনী দামে সস্তা এবং দ্রুতগতিতে কাজ করে।
- ২-এর পরিপূরক গঠনে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা এবং চিহ্নবিহীন সংখ্যা যোগ করার জন্য একই বর্তনী ব্যবহৃত হয়।
- ২-এর পরিপূরক গঠনে যোগ ও বিয়োগের জন্য একই বর্তনী ব্যবহার করা হয়।
তাই আধুনিক কম্পিউটারে ২ এর পরিপূরক গঠনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
৫০। (১৫)১০এর সমকক্ষ BCD কোড এবং বাইনারি সংখ্যার মধ্যে কোনটিতে বেশি বিট লাগে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– BCD এর পূর্ণ রূপ হলো Binary Coded Decimal। ডেসিমেল সংখ্যার প্রতিটি অঙ্ককে ( ০ থেকে ৯ পর্যন্ত) সমতুল্য চার-বিট বাইনারি দ্বারা প্রতিস্থাপন করার পর প্রাপ্ত কোডকে BCD কোড বলে। তাহলে (১৫)১০ এর সমকক্ষ BCD কোড (০০০১০১০১)BCD (১ এর সমতুল্য চার-বিট ০০০১ এবং ৫ এর সমতুল্য চার-বিট ০১০১) যা ৮-বিট। অপরদিকে (১৫)১০ এর সমকক্ষ বাইনারি মান (১১১১)২ যা ৪-বিট। সুতরাং বলা যায়- BCD কোড এবং বাইনারি সংখ্যার মধ্যে BCD কোডে বেশি বিট লাগে।
৫১। ইউনিকোডের পূর্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক্যাল কোডটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ– ইউনিকোডের পূর্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক্যাল কোডটি হলো ASCII, যা American Standard Code for Information Interchange এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ১৯৬৫ সালে রবার্ট বিমার ASCII-7 উদ্ভাবন করেন এবং পরে ASCII-8 তৈরি করেন। অ্যাসকি একটি বহুল প্রচলিত কোড। বর্তমানে অ্যাসকি কোড বলতে ASCII-8 কেই বুঝায়। ASCII-8 এ প্রতিটি কোড আট বিটের হয়। যার সর্ব-বামের বিটটিকে প্যারিটি বিট এবং সর্ব-ডানের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিট বলা হয়, এবং মাঝের তিনটি বিটকে জোন বিট বলা হয়। মোট আট-বিট হওয়াতে এ কোডের মাধ্যমে ২৮ বা ২৫৬টি চিহ্নকে অদ্বিতীয়ভাবে কম্পিউটারকে বুঝানো যায়।
৫২। ইউনিকোড বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য আশীর্বাদ– বুঝিয়ে লিখ।
উত্তরঃ– ইউনিকোড বা Unicode এর পূর্ণনাম হলো Universal Code বা সার্বজনীন কোড। বিশ্বের সকল ভাষাকে কম্পিউটারে কোডভুক্ত করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো একটি মান তৈরি করেছেন যাকে ইউনিকোড বলা হয়। Apple Computer Corporation এবং Xerox Corporation এর একদল প্রকৌশলী ইউনিকোড উদ্ভাবন করেন। ইউনিকোড মূলত ২ বাইট বা ১৬ বিটের কোড। এ কোডের মাধ্যমে ২১৬ বা ৬৫,৫৩৬ টি অদ্বিতীয় চিহ্ন কম্পিউটারকে অদ্বিতীয়ভাবে বুঝানো যায়।ফলে বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের ভাষা ব্যবহার করেই কম্পিউটারে প্রসেস বা প্রক্রিয়াকরণ করা যায়। এই জন্য বলা যায়- ইউনিকোড বিশ্বের সকল ভাষাভাষী মানুষের জন্য আশীর্বাদ।